মেসি বার্সা ছাড়লে ক্ষতির মুখে পড়বে স্পেনের অর্থনীতি
এই গ্রীষ্মেই ক্লাব ছাড়তে চান বলে ব্যুরোফ্যাক্সে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তার এমন ঘোষণায় ক্লাব বার্সেলোনা তো বিশাল ধাক্কা খেয়েছেই, একইসঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে পুরো লা লিগা। কেবল তাই নয়, তার বার্সা ছাড়ার বিশাল প্রভাব পড়বে স্পেনের অর্থনীতিতেও। বিশাল অংকের কর হারাতে যাচ্ছে স্পেন সরকার।
এর আগে স্পেন ছেড়ে গেছেন বর্তমান সময়ের আরেক মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছেড়ে গেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারও।
লিওনেল মেসির চলে যাওয়া হবে ক্লাব বার্সেলোনার জন্য বিরাট ক্ষতি। ৩৩ বছর বয়সী এই ফুটবলার যদি ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান সেক্ষেত্রে ইতিহাসের সেরা ফুটবলারটিকে হারাবে লা লিগাও। আর তার প্রভাব পড়বে স্পেনের অর্থনীতিতেও।
গেল জুনে লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাস জানিয়েছিলেন, ‘রোনালদো চলে যাওয়ায় রিয়াল মাদ্রিদ হতাশ ছিল সত্যি তবে আমাদের খুব একটা ক্ষতি হয়নি। কারণ আমরা বছরের পর বছর ধরে নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তি তৈরি করেছি। তবে মেসির ক্ষেত্রে বিষয়টি পুরোপুরি আলাদা। সে ফুটবল ইতিহাসের সেরা ফুটবলার। আমরা সৌভাগ্যবান যে সবসময় তাকে আমরা আমাদের লিগে পেয়েছি। আমার বিশ্বাস ওর চলে যাওয়া হবে বিরাট ক্ষতি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে যদি সে অন্য কোন লিগে খেলে।’
২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে য়্যুভেন্তাসে যোগ দেন রোনালদো। স্বাভাবিকভাবেই ফুটবল প্রেমীদের একটা অংশের চোখ চলে গেছে ইতালিয়ান লিগে। মেসি যদি ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান পুরো ফুটবল বিশ্বের চোখ চলে যাবে সেখানেও। সেক্ষেত্রে লা লিগা হারাবে তাদের জৌলুশ সঙ্গে বিশাল অংকের অর্থ। স্পন্সররাও আগ্রহ হারাবেন লিগ থেকে।
দুই মহাতারকা যখন একসঙ্গে একই লিগে খেলেছেন স্বাভাবিকভাবেই পুরো বিশ্বের চোখ ছিল লা লিগায়। ফলে হু হু করে বেড়েছে লা লিগার স্পন্সর মানি। সম্প্রচার স্বত্ত্ব থেকে শুরু করে সবকিছুতেই কয়েকগুণ বেশি আয় করেছে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। মোটের ওপর সে লাভটা গেছে স্পেনের রাজস্বভান্ডারেও। কারণ টাকার জাহাজের কর হিসেবে যে অংকটা তারা পেয়েছে সেটিও তো নেহাত কম নয়!
স্প্যানিশ একটি গণমাধ্যম বলছে, বেতনভাতা ও অন্যান্য আয়সহ সবমিলিয়ে বার্ষিক প্রায় ৫০ মিলিয়ন ইউরো কর পরিশোধ করেন মেসি। বাংলাদেশি অংকে যেটি ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। এই পুরো অংকটি হারাবে স্পেন সরকার। রোনালদোসহ যদি ক্ষতিটা ধরা হয় সেটি প্রায় ৯০ মিলিয়ন ইউরো। আর বার্সা থেকে বিদায় একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যাওয়া সুয়ারেজের অংকটাও হিসেব করলে সেটি প্রায় ১১০ মিলিয়ন ইউরো। বাংলাদেশি অংকে ১১০০ হাজার কোটি টাকা!
এমনিতেই করোনা ভাইরাসের ধাক্কায় টালমাটাল স্পেনের অর্থনীতি। ধাক্কা খেয়েছে বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদের মতো ইউরোপের অন্যতম ধনী দুটো ক্লাব। স্পেনের অন্যান্য ক্লাবগুলো তো সেখানে নচ্ছার! লা লিগার তুলনামূলক ছোট ক্লাবগুলোর আয়ের ৮০ শতাংশই আসে টিভি সম্প্রচার স্বত্ত্ব থেকে। সেখানে এবার দর্শকবিহীন মাঠে খেলা হওয়ায় সম্প্রচার স্বত্ত্ব থেকেও খুব বেশি আয় করতে পারেনি তারা।