করোনায় মৃত্যু ছাড়াল দুই লাখ : ২৮ লক্ষাধিক আক্রান্ত
নিউজ ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়েছে; আর এই মৃত্যুর এক-চতুর্থাংশই ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে।এই সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯৩৮ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন আট লাখ ১০ হাজার ৩২৭ জন। খবর রয়টার্সের।
চীনে প্রাদুর্ভাবের চার মাস পর গত ১০ এপ্রিল কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা লক্ষ ছুঁয়েছিল।
তার আট দিন পর ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু এই সংখ্যাকে দেড় লাখ ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। তার পরের ৫০ হাজারের মৃত্যু ঘটেছে সাত দিনে।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির শনিবার ( ২৫ এপ্রিল) রাতে হালনাগাদ করা তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে নতুন করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ৬৯৮ জন।
মৃত্যুর মতো আক্রান্তের সংখ্যায়ও বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; মোট কোভিড-১৯ রোগীর এক-তৃতীয়াংশই ওই দেশটির নাগরিক।
বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে নয় লাখ ১৯ হাজার; আর মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার। দেশটিতে আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচ দশমিক সাত শতাংশেরই মৃত্যু ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিপর্যয়কর অবস্থা নিউ ইয়র্কে; শুধু এই শহরেই মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজারের বেশি।
যে দুই লাখের মৃত্যু ঘটিয়েছে করোনাভাইরাস, তার অর্ধেকের বেশি মানুষ ইউরোপের।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে মানবদেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঘটনা শনাক্ত হয়। তার প্রায় এক মাস পর প্রথম মৃত্যুটি চীনে ঘটেছিল ১১ জানুয়ারি।
চীনের বাইরে প্রথম মৃত্যুটি ঘটেছিল প্রায় এক মাস পর ২ ফেব্রুয়ারি ফিলিপিন্সে। সেদিন মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৬২।
মৃতের সংখ্যা এক হাজারে পৌঁছেছিল ১০ ফেব্রুয়ারিতে। অর্থাৎ প্রথম মৃত্যুর পর মৃতের সংখ্যা এক হাজারে পৌঁছতে লেগেছিল ঠিক এক মাস। এরপর মৃতের সংখ্যা দুই হাজারে যেতে সময় লাগে আট দিন।
তার এক মাস পর ১৯ মার্চ মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ায়। এরপর ইউরোপে কাবু হয়ে যাওয়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার মৃত্যু ঘটতে থাকে।
যে সব দেশে সর্বাধিক মৃত্যু:
যুক্তরাষ্ট্র: মৃত্যু ৫১ হাজার ৯৪৯; আক্রান্ত নয় লাখ সাত হাজার ৯৬; মৃত্যুর হার ৫.৭ শতাংশ।
ইতালি: মৃত্যু ২৫ হাজার ৯৬৯; আক্রান্ত এক লাখ ৯২ হাজার ৯৯৪; মৃত্যুর হার ১৩.৫ শতাংশ।
স্পেন: মৃত্যু ২২ হাজার ৯০২; আক্রান্ত দুই লাখ ২৩ হাজার ৭৫৯; মৃত্যুর হার ১০.২ শতাংশ।
ফ্রান্স: মৃত্যু ২২ হাজার ২৪৫; আক্রান্ত এক লাখ ৫৯ হাজার ৯৫২; মৃত্যুর হার ১৩.৯ শতাংশ।
যুক্তরাজ্য: মৃত্যু ২০ হাজার ৩১৯; আক্রান্ত এক লাখ ৪৯ হাজার ৫৫৪; মৃত্যুর হার ১৩.৫ শতাংশ।
বেলজিয়াম: মৃত্যু ছয় হাজার ৯১৭; আক্রান্ত ৪৫ হাজার ৩২৫; মৃত্যুর হার ১৫.১ শতাংশ।
জার্মানি: মৃত্যু পাঁচ হাজার ৮০২; আক্রান্ত এক লাখ ৫৫ হাজার ৪১৮; মৃত্যুর হার ৩.৭ শতাংশ।
ইরান: মৃত্যু চার হাজার ৬৫০; আক্রান্ত ৮৯ হাজার ৩২৮; মৃত্যুর হার ৬.৩ শতাংশ।
চীন: মৃত্যু চার হাজার ৬৩৬; আক্রান্ত ৮৩ হাজার ৮৯৯; মৃত্যুর হার ৫.৫ শতাংশ।
দক্ষিণ এশিয়ায় মৃত্যু:
ভারত: মৃত্যু ৭৮০; আক্রান্ত ২৪ হাজার ৯৪২; মৃত্যুর হার ৩.২ শতাংশ।
পাকিস্তান: মৃত্যু: ২৫৬; আক্রান্ত ১২ হাজার ২২৭; মৃত্যুর হার ১.৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ: মৃত্যু ১৪০; আক্রান্ত চার হাজার ৯৯৮; মৃত্যুর হার ২.৮ শতাংশ।
আক্রান্ত ও মৃতের এই তালিকা শুধু যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে করছেন গবেষকরা।
যারা একবার আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছেন, তাদের দেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম বলে আগে ধারণা করা হচ্ছিল।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হুঁশিয়ার করছে, কারও দেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি পুনরায় তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাবে বলে প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি।