ওজন বাড়তে দিবেন না
সংবাদ আজকাল,ডেক্সঃ ওজন বাড়তে দিবেন না
আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত ওজন অর্জন করতে পেরে থাকলে আপনাকে অভিনন্দন! তবে, এত পরিশ্রমের পর আবার পুরনো অভ্যাসে ফিরে যাবেন না। কঠোর ডায়েটের প্রভাব সাধারণত দীর্ঘ হয় না,কারণ অনেক মানুষ ওজন হ্রাস পাওয়ার পর আগেরমত খাবার এবং কাজকর্মের অভ্যাসে ফিরে যায়। যদি আপনি দেখেন যে আপনার ওজন আবার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে এখনই ব্যবস্থা নেয়ার সময়।
কিভাবে ওজন কম রাখবেন
আপনার কাক্ষিত ওজন অর্জন এবং তা ধরে রাখার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে আপনার খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণে দীর্ঘ মেয়াদি পরিবর্তন আনা, যা আপনি সারা জীবন ধরে রাখতে পারবেন। নিচের পরামর্শগুলো আপনাকে বাড়তি ওজন এড়িয়ে চলতে সাহায্য করতে পারে: নিয়মিত কম ক্যালরির খাবার খাবেন। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে স্বল্প-ফ্যাট এবং উচ্চ-প্রোটিনের ডায়েট তাদের ওজন হ্রাসে সাহায্য করে। এর কারণ এটা হতে পারে যে, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার দ্রুত আপনার পেট ভরিয়ে দেয়, ফলে আপনি খাবারের মাঝে আর কোন নাস্তা খাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না।
১। অগ্রিম পরিকল্পনা- আপনার রুটিনের, যেমন- বাইরে খাওয়া বা সপ্তাহিক ছুটির দিন পরিবর্তন করা হলেও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস বজায় রাখুন। অগ্রিম পরিকল্পনা করে রাখলে আপনার ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
২। সকালে নাস্তা করবেন- গবেষণায় দেখা গিয়েছে সকালের নাস্তা মানুষকে তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে। সকালে নাস্তা করলে আপনি আবার দ্রুত খুবই ক্ষুধার্থ হবেন না, ফলে আপনি দুপুরের খাওয়ার আগে নাস্তাও করবেন না।
৩। কর্মঠ থাকুন- আপনার ব্যায়ামের মাত্রা নির্ধারণ করুন। আপনি যদি ইতোমধ্যে নিয়মিত হাঁটেন, তবে আরো দীর্ঘক্ষণ হাঁটার কথা চিন্তা করুন বা দৌড়ানো শুরু করুন।
৪। আপনার ওজন পর্যবেক্ষণ করুন- নিয়মিত আপনার ওজন মেপে দেখুন, যাতে ওজনের যেকোন সূক্ষ পরিবর্তন আপনি ধরতে পারেন। কারো সাহায্য নিন। আপনার ওজন নিয়ে আগে যদি আপনি কোন ডাক্তারের সাথে কথা বলে থাকেন, তবে তা নিয়মিত চালিয়ে যেয়ে তাদের সহায়তা নিতে থাকুন।
৫। পুরো বিষয়টিকে আকর্ষনীয় করে তুলুন বৈচিত্র্য হচ্ছে জীবনের মসলা, তাই যদে আপনি দেখেন যে আপনি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছেন, তবে একটু ভিন্নতা নিয়ে আসুন। নতুন স্বাস্থ্যকর রান্নার বই কিনুন, স্বাস্থ্যকর রান্নার কোর্সে ভর্তি হোন বা নতুন কোন ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। নিজে নিজে লক্ষ্য ঠিক করুন। এটা আপনাকে স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং ব্যায়াম চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করবে। যেমন- সামনে কি এমন কোন বিশেষ দিন আছে, যখন আপনি আপনার সর্বোচ্চ ভাললাগা অনুভব করতে চান? এখন আমার কি খাওয়া উচিৎ?
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে দৈনিক একজন পুরুষের গড়ে ২,৫০০ ক্যালরি এবং একজন নারীর গড়ে ২,০০০ ক্যালরি শক্তির প্রয়োজন হয়। যদি আপনি এরচেয়ে কম ক্যালরির খাবার খেয়ে থাকেন এবং ইতোমধ্যে স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জন করে থাকেন, তবে হয়তো আপনি আপনার ক্যালরি গ্রহণ বাড়াতে চাইবেন। খুব অল্প পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ বাড়ান, নয়তো আপনি আবার মুটিয়ে যাবেন এবং
কর্মঠ থাকার কথা মনে রাখবেন।
আরও ওজন কমাতে হবে?
যদি আপনার ওজন আরও কমাতে হয়, তবে আপনাকে অবশ্যই আপনার ক্যালরি গ্রহণ এবং শারীরিক
কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে ওজন কমানোর নিরাপদ মাত্রা হচ্ছে ০.৫ থেকে ১
কেজি। তাই, আপনার ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় সময় নির্ধারণ করুন।
স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাদ্য
শুরুতে আপনি দিনে একটি উচ্চ-ক্যালরির নাস্তার পরিবর্তে একটি বিকল্প স্বাস্থ্যকর খাবার
নির্বাচন করতে পারেন। যেমন- কোন মিষ্টি দ্রব্যের পরিবর্তে আপনি এক গ্লাস লেবুর শরবত বা এক
টুকরো তাজা ফল খেতে পারেন। সার্বিকভাবে, সুষম খাবার খাওয়ার সময় কম খাওয়া এবং আরো অধিক
কর্মঠ হলে আপনার ওজন আর বাড়বে না।
ব্যায়াম
ব্যায়ামের ক্ষেত্রে বলতে হয়, সারা দিন আরো বেশি নড়াচড়ার পথ বের করুন। এটা নির্দেশিত যে ১৯
থেকে ৬৪ বছরের প্রাপ্তবয়স্করা সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মধ্যম-মাত্রার এরোবিক ব্যায়াম
(aerobic physical activity) করবে, যেমন- দ্রুত হাঁটা বা সাইক্লিং। আপনি যদি সবে ব্যায়াম শুরু
করেন, তবে আপনার ধীরে ধীরে ব্যায়ামের মাত্রা বাড়ানো উচিত। বিস্তারিত জানার জন্য
প্রাপ্তবয়স্কের জন্য ব্যায়ামের নির্দেশিকা দেখুন।
শারীরিকভাবে কর্মঠ হওয়া স্বাস্থ্যকর জীবনাচরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেসব মানুষ নিয়মিত
ব্যায়াম করে তাদের অনেক জটিল রোগ যেমন- হৃৎপিন্ডের রোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, কিছু ক্যান্সার
এবং স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। অনেকের জন্য প্রাণবন্তভাবে হাঁটা দৈনিক কাজের সাথে মিলে
যাওয়া একটি চমৎকার ব্যায়াম।
পরিবর্তনগুলোতে অনড় থাকুন
আপনার জীবনাচরণে কী পরিবর্তন আনতে হবে তা একবার নির্ধারন করার পর, এগুলোকে জীবনের
অংশে পরিণত করতে সময় নিন। কিছু ক্ষেত্রে এসব পরিবর্তনের ফলে যে ওজন কমে যাওয়াটা বন্ধ
হয়ে যাবে এবং আপনার ওজন স্থির থাকবে। কিন্তু এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, যদি আপনি আপনার
নতুন এবং স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে চান, তবে আপনাকে ঐ পরিবর্তনগুলোতে অনড় থাকতে
হবে। ধাপে ধাপে পরিবর্তন পদ্ধতি আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জনে সর্বোত্তম সুযোগ দিবে।