ইমাম মাহদী (আ.) কেন আসবেন
নুবয়ত শেষ হয়ে গেছে। নবী-রসুল আর আসবেন না। তাহলে এই উল্টো পথে চলা, পৃথিবীময় নির্যাতিত, নিপীড়িত, দিকবিদিক জ্ঞানশুন্য এই জাতিকে আবার সঠিক পথে কে আনবে? শেষনবী (সা.) বলে গেছেন একজন ‘মাহদী’ আসবেন ঐ কাজ করার জন্য। মাহদী তার নাম নয়, ওটা তার বিশেষণ বা উপাধি, তার নিজের অন্য নাম থাকবে।
লক্ষ্য করুন তার বিশেষণটি কী? মাহদী। শব্দটি এসেছে হেদায়াত থেকে- যিনি হেদায়াত প্রাপ্ত এবং হেদায়াতকারী; সত্যপথপ্রাপ্ত এবং সত্যপথ প্রদর্শনকারী। শেষনবী (সা.) ভবিষ্যতের সেই মানুষটির উপাধি ও বিশেষণে বললেন ‘মাহদী’, তিনি বললেন না যে মুত্তাকী আসবেন। কারণ মুত্তাকী আমরা যথেষ্ট, একেবারে চুলচেরা ব্যাপারেও আমরা প্রচণ্ড মুত্তাকী। আমাদের নামায, রোযা, হজ্ব¡, যাকাত, দাড়ি, মোচ, পাগড়ী, পাজামা, টাখনু, খাওয়া-দাওয়া, তসবিহ যিকরে ভুল ধরে কার সাধ্য? নিখুঁত থেকে নিখুঁততর, সহিহ থেকে আরও সহিহ হবার প্রচেষ্টা চলে, কিন্তু চলছি সেরাতুল মোস্তাকীমের, দীনুল কাইয়্যেমার ঠিক বিপরীত দিকে, সমাজে বিরাজিত যাবতীয় অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে কথা না বলে সংগ্রামের বিপরীত দিকে, গর্ত্তের দিকে, পলায়নের দিকে, জাহান্নামের ভয়াবহ আযাবের দিকে। যিনি আমাদের এই জাহান্নামের দিকে গতি উল্টিয়ে আবার জান্নাতের দিকে করবেন অর্থাৎ হেদায়াত করবেন তার উপাধি, বিশেষণ হচ্ছে মাহদী (আ.)।
আল্লাহর রসুল বলেছেন- এমন সময় আসবে মসজিদসমূহ হবে লোকে লোকারণ্য, কিন্তু সেখানে হেদায়াহ থাকবে না। লক্ষ্ করুন- এখানেও আল্লাহর রসুল শব্দ ব্যবহার করেছেন ‘হেদায়াহ’। তিনি বলেন নি মানুষের মধ্যে তাকওয়া থাকবে না। তাকওয়া অবশ্যই থাকবে, খুব তাকওয়া থাকবে। না থাকলে তো আর মসজিদ ভর্তি করত না। থাকবে না কেবল হেদায়াহ। মহানবী (সা.) এর সেই ভবিষ্যদ্বাণী কি পূর্ণ হয়নি?
আমরা যখন বলি- এই জাতি হেদায়াতে নেই, প্রকৃত ইসলামে নেই, তখন একটা শ্রেণি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন। কী! আমরা ইসলামে নেই? আমরা মুসলমান নই? প্রশ্ন হলো- আপনারা যদি সঠিক পথেই থাকেন, যদি প্রকৃত ইসলামেই থাকেন, তাহলে মাহদী (আ.) এর জন্য এত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কেন? কেন আপনারা আশা করছেন যে, মাহদী (আ.) এসে এই জাতিকে আবার তার হারানো কক্ষপথে উঠাবে? জাতিকে পৃথিবীময় দাসত্ব ও নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাবে ও সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করবে?